কাউসার আহম্মেদ শাকিল ”
বিয়ে হল আজ সাতটি বছর,
বাচ্চা আসেনি কোলে।
দিন কাটে তাই আবুল মিয়ার,
নিদ্রা আহার ভুলে।
শাশুরী বলল- যাওনা বাবা,
পাগল পীরের কাছে।
খুলে বল তারে মনের কথা,
ইচ্ছে যত আছে।
পরের দিন’ই আবুুল মিয়া,
ছুটল পীরের বাড়ি।
সাথে নিয়েছে ফলফলাদি,
মিষ্টি রসের হাড়ি।
পৌছল এসে ঠিক দুপুরে,
যেইখানে আছে পীর।
দেখল সেথা খালকা ঘিরে,
প্রচুর লোকের ভীড়।
পীরের হাতে সোনার আংটি,
গলায় টাকার মালা।
চেয়ারখানা শৌখিন বটে,
ম্যালা টাকার ঠেলা।
ভাবলো বসে আবুল মিয়া,
মুখে দিয়ে তার হাত।
পীরে তাকে বাচ্চা দিবে,
রক্ষে হবে জাত।
খানিক বাদে ডাক এসেছে,
‘আবুল মিয়া’ বলে।
সুড়সুড়িয়ে পীরের কাছে,
আবুল এল চলে।
বলল পীরেঃ- কি চাই বাছা…??
আর্জি কি তোর বল।
ধনসম্পদ লাগবে নাকি?
ক্ষমতা রসদবল??
আবুল মিয়া বলল উঠে,
খানিক গলা তুলে।
বিয়ে হল আজ সাতটি বছর,
বাচ্চা পায়নি কোলে।
যে করেই হোক একটি বাচ্চা,
করুন আমায় দান।
রক্ষে হবে জাতটি আমার,
শান্ত হবে প্রাণ।
একটু হেসে বলল পীরে,
এই বুঝি তোর দাবী?
থাকতে আমি চিন্তা কিসের?
বাচ্চা পেয়ে যাবি।
বেজায় খুশি আবুল মিয়া,
বলল হেসে তবে।
বলুন বাবা এখন আমায়,
কি কি করতে হবে??
পীর শুধাল এই নে তাবিজ,
বউয়ের গলায় দিবি।
অমুক তারিখ ওরশ আছে,
ছাগল নিয়ে আসবি।
আসার সাথে বউটাকে তোর,
করে দেব ফুঁক -ঝাড়।
ছাগল দিল,হাদিয়া দিল,
তাবীজ নিল ঢের।
বউয়ের পেটে বাচ্চা এল কিনা,
আজও পেলনা টের।
বছর তি’নেক চলেই গেল,
বাচ্চার নেই দেখা।
ক্লান্ত আবুল বুঝল এবার,
সবই ছিল ধোক।
হায়রে মুমিন বুঝবি কবে?
পীরের বুদ্ধির চিকন ধার,
দূর্গাপূজা আর দরগাহ পূজা,
আজ মিলেমিশে একাকার।
বিঃদ্রঃ- কবিতায় ‘আবুল মিয়া’ নামটি কাল্পনিক। এই নামের ব্যাক্তির সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
সর্বশেষ আপডেটঃ ২:০৫ অপরাহ্ণ | আগস্ট ১৪, ২০১৮